পাঠ পরিচিত

'সুভা' গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত ‘গল্পগুচ্ছ’ থেকে সংকলিত হয়েছে। প্রতিবন্ধী কিশোরী সুভার প্রতি লেখকের ভালোবাসা ও মমত্ববোধে গল্পটি অমর হয়ে আছে। সুভা কথা বলতে পারে না, মা মনে করেন এটা নিয়তির দোষ কিন্তু বাবা তাকে ভালোবাসেন। আর কেউ তার সঙ্গে মেশে না খেলে না। কিন্তু তার বিশাল একটি আশ্রয়ের জগত আছে- যারা কথা বলতে পারে না সেই প্রাণীদের কাছেই সে মুখর। তাদের সে খুবই কাছের জন। আর বিপুল নির্বাক প্রকৃতির কাছে সুভা পায় মুক্তির আনন্দ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত প্রতিবন্ধী মানুষের আশ্রয়ের জন্য একটি জগৎ তৈরি করেছেন এবং সেই সঙ্গে তাদের প্রতি আমাদের মমত্ববোধের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ লাইন ও প্রশ্ন :

সুভার উন্নত শ্রেণীর মধ্যে প্রতাপ তার বন্ধু ছিল। প্রতাপ গোঁসাইদের ছোট ছেলে যে নিতান্ত অকর্মণ্য লোক। প্রতাপের প্রধান শখ ছিপ ফেলিয়া মাছ ধরা।‌‌এছাড়া গোয়ালের দুটি গাভী-সর্বশী ও পাঙ্গুলি, ছাগল ও বিড়ালশাবক ও সুভার বন্ধু ছিল। 


• পিতা মাতার নিরব হৃদয় ভারের মতো বিরাজ করিতেছে- বলতে লেখক কি বুঝাতে চেয়েছেন?
সুভা বাক-প্রতিবন্ধী হাওয়ায় তার বিবাহ হচ্ছে না। এ কারণে সে পিতা-মাতার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লেখক উক্ত কথাটি দ্বারা এটি বুঝাতে চেয়েছেন। 

সুভার বড় দুই বোন সুকেশিনী ও সুহাসিনী, তাদের দস্তুরমতো অনুসন্ধান ও অর্থ ব্যয় বিবাহ হয়ে গেছে। কিন্তু সুভা বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার বিবাহ হচ্ছে না। যার ফলে তাদের গ্রামের মধ্যে এক প্রকার সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব কারণে সুভা তার পিতা-মাতার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উক্তিটি ধারা এটিই বোঝানো হয়েছে। 

• সুভার মা সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন কেন? 
বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সুভাকে তার মাতা নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন। 

মাতা পুত্র অপেক্ষায় কন্যাকে নিজের অংশ রূপে বেশি দেখেন। কারণে কন্যার কোন অসম্পূর্ণতা দেখা দিলেই  যেন তার নিজেরই কোনো দোষ মনে করতেন। যার কারণে মাতা মনে মনে লজ্জিত হতেন। যেহেতু সুভা ছোটবেলা থেকে কথা বলতে পারেনা অর্থাৎ সে বাক প্রতিবন্ধী। তাই মাতা সুভা কে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন।