Article on education


একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যদি সেই দেশে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অন্তরে নীতি-নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করতে না পারে, তবে সেই শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে লাভ কি? শিক্ষা এমন একটি প্রয়োজনীয় পদ্ধতি যা কিনা স্বয়ং আল্লাহ তাআলার বলেছেন যে তোমরা জ্ঞান অর্জন করো। আর সেই জ্ঞান যদিও বর্তমানে ২১ শতাব্দীতে এসেও হোক বা সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ অস্থায়ী এই পৃথিবী উন্নতির পিছনে ব্যবহার করছে। তবে অবশ্যই এতে কোন ভুল নেই। পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়তে হবে, রিজিকের সন্ধানে। আর অবশ্যই সেই সাথে পড়তে হবে সালাত, মানতে হবে ইসলাম শরীয়ত‌। "জন্ম নিলেই মরতে হবে", এ কথা আমরা সকলেই জানি এ কথা অস্বীকার করার মত লোক পৃথিবীতে নেই। মৃত্যুর পর আমাদের আখিরাতের জীবন শুরু হয়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা পায়।  শিক্ষার্থীরা যেন তাদের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে। পৃথিবীতে এসেছি আমরা সত্যের সন্ধানে, সত্যকে একবার পেয়ে গেলে সে সত্য পথে চলে আখিরাতকে গড়ে তোলবার জন্য, যাতে আমরা আখিরাতে শান্তি পেতে পারি সে সাথে আল্লাহর সন্তুষ্ট। অবশ্যই মনে এ কথা আসতে পারে তবে কেন আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এভাবে করা হচ্ছে না। তার আগে প্রশ্ন করা উচিত আপনি কেন আপনার সন্তানকে সে নীতি-নৈতিকতা বোধ এবং ধর্ম সম্পর্কে, ইসলামিক শরীয়ত সম্পর্কে জ্ঞান দান করছেন না? তাদেরকে কেন এ সম্পর্কিত অবহিত করছেন না? আপনার ঘরে কোরআন শরীফ আছে সে কোরআন শরীফের বাংলা অর্থ আপনার ছেলেমেয়েদের পড়ে শোনান। পার্থিব জ্ঞান অর্জন এ পৃথিবীতেই ব্যবহার করা যাবে মাত্র। আর ইসলামী জ্ঞান, ধর্মীয় জ্ঞান পৃথিবী নয় বরং আখিরাতের জন্যও কল্যাণকর। ইসলামের ছয়টি বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ আছে। সেগুলো আপনারা আপনাদের বাসায় কিনে রাখুন। আপনাদের ছেলেদেরকে পড়ে শোনান এবং তাদেরকে তাদের অবসর সময় মোবাইল হাতে না দিয়ে পবিত্র বইগুলো হাতে দিন। অবশ্য কি বলল বর্তমান যুগে আমরা সকলেই অবসর সময়ের নামে হাজার হাজার মিনিট, ঘন্টা এভাবেই মোবাইলে নষ্ট করে দিচ্ছি। যার মধ্যে হয়তো আমি আপনি কেউই রেহাই পাইনি বা কেউ বাদ যায়নি। তবে আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে, ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যাতে আমাদের দেশ এবং জাতির মধ্যে নীতি-নৈতিকতা বোধ জাগ্রত হয়। দেশাত্মবোধ জাগ্রত হয়। আর এক ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করে নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বরণ অন্যকে শুনানোটাও সমান প্রয়োজন। ছোট ছেলে মেয়েদের গল্পের বই পড়ে শোনানোর চেয়ে ইসলামের ইতিহাস পড়ে শোনানোটা শ্রেয়। মনে রাখবেন শিক্ষা জীবনের কোন শেষ নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা সকলে শিখতেই থাকি। আমরা কেউই পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করে ফেলতে পারি না। পৃথিবীতে এমন কোন সাধারণ মানুষ নেই যে সকল বিষয় সবকিছু পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করে পৃথিবীতে থেকে গিয়েছে। আর আমি যখন শিক্ষা বা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে কথা বলছি তখন এই মানে এই নয় যে তা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা।  প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার শুধুমাত্র একটি পথ যা কিনা আপনাকে আপনার শিক্ষা জীবনের মান, গুণ এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনাকে আপনার কর্মজীবনের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। আর তার মানে এই নয় যে আপনি যদি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনে ব্যর্থ হন তবে আপনার জীবন শেষ। বরং, জীবনে শেষ মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার হায়াত আছে আপনাকে চেষ্টা করে যেতে হবে এবং জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হবে। আত্মহত্যা করে জীবন সংগ্রাম হতে কাপুরুষের মতো পালানোর চেষ্টা করবেন না। আর মনে রাখবেন আত্মহত্যাকারী কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আজীবন জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। আজকের কিশোর আগামী প্রজন্মের নেতা। যদি আজকের কিশোরকে গড়ে তুলতে না পারেন তাহলে আগামী প্রজন্মের নেতা হবে দুর্নীতিবাজ ও দেশদ্রোহী।

আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলবার তৌফিক দান করুক। আমিন।

লিখেছেন: Tasib Lotifi