সম্প্রীতির ঢাকার মিরপুরে ঘটে যাওয়া এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয় ঢাকাবাসী। একই পরিবারের তিনজন এবং তাদের বাঁচাতে গিয়ে স্থানীয় এক যুবক প্রাণ হারান। তবে দায়ী কার?

৫ থেকে ৮ হাজার টাকা দিয়ে একটা মিটার নামিয়ে মাসে এক থেকে দুই হাজার টাকা দেওয়ার ভয়ে, চুরি করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার। তবে দিনশেষে কি এ ব্যবহারের কোন লাভ হয়েছে? আপাত দৃষ্টিতে তাদের কাছে মনে হতে পারে প্রত্যেক মাসে তারা তাদের টাকাটা বাঁচাতে পেরেছে। তবে দিনশেষে দেখা গেল সেই চোরাই বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে ঝরে গেল চারটি তাজা প্রাণ। মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে গেল একটি পরিবার, বেঁচে রইল একটি ছোট শিশু যে কিনা এখন অনাথ! 

ঢাকার সড়কে পানি জমা, বিষয়টা কোন নতুন কথা না। সে পূর্ব থেকে আজ অব্দি ঢাকার রাস্তায় বৃষ্টি হলেই হাটু থেকে কোমর অব্দি পানি জমে। যার মূল কারণ হলো ড্রেন অব্যবস্থাপনা। তবে কি শুধু দায় ী একটি নির্দিষ্ট মানুষ বা দলের উপরে? নাকি সেই সাথে দায়ী আছি আমরাও। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে পলিথিন, প্লাস্টিক ফেলে দেই। এসব ময়লা জমাট বাধায় ড্রেনে। তবে তা আমরা সবাই ছোটবেলা থেকেই জানি এবং কোন না কোন শ্রেণীর বইতে পড়ে এসেছি। কিন্তু দিনশেষে কি কোন লাভ হচ্ছে? আমরা কেউ কি কোন ধরনের সচেতন হচ্ছি নাকি এখনো পর্যন্ত আমরা সেই রকমই আছি যে রকম পূর্বে ছিলাম? অবশ্যই উত্তরে কোনো সন্দেহ নেই যে আমরা এখনো অসচেতন। কয়েক বছর আগে যেখানে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তার উপরে ময়লা ফেলার জন্য ময়লা ঝুড়ি রাখা হয়েছিল সেই ময়লার ঝুড়ি সব চুরি হয়ে গেল রাতের অন্ধকারে। সবশেষে সেই উদ্যোগও গেল বৃথায়!

মাস শেষ হইতে না হইতে আমরা সবাই ভুলে যাব যে এ বছর ঢাকার রাস্তায় বৃষ্টি জমা পানিতে ডুবে চারটি প্রাণ ঝরে পড়ল। কারো মনে থাকবে না, থাকবে না কোনো আফসোস। কেউ কথা বলবে না সে অনাথ শিশুর যে বেঁচে রইল কিন্তু এখন আর কেউ নেই তার। 

মনে রাখবেন আজ সেই ছোট্ট শিশুর মা, বাবা, বোন পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেল। আল্লাহ রক্ষা করুক, কাল সেই জায়গায় হতে পারে আপনি বা আপনার পরিবারেরই কেউ... তাই আজিই সচেতন হোন। না হয় কখনো নয়।

দিনশেষে এই ঘটনার জন্য দায়ী আমরা সবাই। আমি শুধু লিখেই চলে গেলাম বাকিটা কর্মে প্রকাশ করার দায়িত্ব আমার আপনার।